এম.মনছুর আলম, চকরিয়া : কক্সবাজারের চকরিয়ায় আসন্ন কোরবানির জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় ২০ মণ ওজনের শখের ষাড় ‘বড় মিয়া’কে। কেউবা দারিদ্র বিমোচনের জন্য আবার কেউবা বেকরত্ব ঘুচিয়ে স্বাবলম্বি হতে খামার গড়ে তুলেন। কিন্তু নিতান্তই শখের বসে খামার গড়ে তোলা যেমন অন্যান্যদের অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে তেমনই চাহিদা পুরন হওয়ায় দেখা দেয় উজ্জল এক সম্ভবনা। শখ করে মেয়ের নামে খামার গড়ে তুলে এমন এক অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন চকরিয়া পৌরসভার মানবিক জনপ্রতিনিধি হিসেবে পরিচিত ৬নম্বর ওয়ার্ডের জনপ্রিয় কাউন্সিলর জিয়াবুল হক।
তিনি জনপ্রতিনিধি হয়ে পৌর এলাকার সর্বশ্রেণির জনগণকে সেবা দেওয়ার পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন গরু-ছাগল ও মহিষের খামার। তার এ খামারে বর্তমানে দেশীয় জাতের ছাড়াও উন্নত জাতের ছোট-বড় ২০টি গরু, ১২টি মহিষ ও ২৫টি’র মতো ছাগল রয়েছে। স্বাস্থ্য সম্মতভাবে খামারে এইসব পশুদের লালন-পালন করা হচ্ছে। এ খামারে সবচেয়ে আলোচিত গরুটি হলো ‘বড় মিয়া’। পৌর কাউন্সিলর জিয়াবুলের এ গরুটিকে ঘিরে সোস্যাল মিডিয়ায় সাড়া ফেলেছে।
জানা গেছে, চকরিয়া পৌরসভার ৬নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জিয়াবুল হক জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানুষের কল্যাণে নিরলস ভাবে কাজ করার পাশাপাশি অনেকটা শখের বসে গরুর খামার করার সিদ্ধান্ত নেয়। তারপর নিজের মেয়ের নামে গড়ে তুলেছেন ‘ মাইশা ডেইরি ফার্ম ‘ নামের একটি খামার। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে খামারের পরিধি। বর্তমানে খামারে গরু-ছাগল দেখভাল করার জন্য দুজন কর্মচারী রেখেছেন। তিনি হয়ে উঠেছেন উপজেলার গরু-ছাগল খামারিদের আইডল। ২০১৮ সালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অর্জন করেছেন শ্রেষ্ঠ ছাগল খামারির পুরস্কার। নিতান্তই শখের বশে গড়ে তোলা খামারটি যেমন অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত তেমনই উজ্জ্বল সম্ভবনাময় খামারের স্বীকৃতিও লাভ করেছেন।
চার বছর পূর্বে তার খামারে একটি ফিজিয়াম জাতের গাভী কেনেন। ওই গাভীটি প্রায় এক বছর পরে একটি ষাঁড়ের বাছুর জন্মদেয়। শখের এ বাছুরের নাম রাখা রাখেন ‘বড় মিয়া’। উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে ও পরামর্শে নির্ভেজাল প্রাকৃতিক খাবারে ষাঁড়টি বড় করে তোলা হয়েছে। এবারের কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই ষাঁড়টির ওজন হয়ে দাঁড়িয়েছে ১টনের অধিক প্রায় (২০ মণ)। বর্তমানে ষাড়টির বয়স ৩ বছর এবং ২ দাঁত। কালো রঙের এ ষাঁড়টির দৈর্ঘ্য ৯ ফুট, উচ্চতা ৫ফুট। বড় মিয়া’কে বিক্রির জন্য এখনো মূল্য নির্ধারণ করেনি গরুর খামারি। কোরবানির ঈদে বিক্রির উদ্যেশ্যে প্রস্তুত করা হচ্ছে। বড় মিয়া’কে একনজর দেখতে ভিড় করছেন বিভিন্ন এলাকার কৌতূহলী মানুষ। তবে গরুর খামারী জেলার সবচেয়ে বড় গরু বলে দাবী করেন।
চকরিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর ও মাইশা ডেইরি ফার্ম’র মালিক জিয়াবুল হক এ প্রতিবেদককে জানান, ৩ বছর আগে তার খামারে ফিজিয়াম জাতের একটি ষাঁড়ের জন্মহয়। শখ করে ষাঁড়টির নাম রেখেছিলাম ‘বড় মিয়া’। নিজেই প্রতিদিন তাকে গোসল করা থেকে শুরু করে সবকিছু দেখভাল করেন তিনি। বড় মিয়া সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার খায়। ইনশাআল্লাহ কোনো ধরনের রোগবালাই ছাড়া কোরবানির জন্য শখের এ বড়মিয়া’কে প্রস্তুত করা হয়েছে। বর্তমানে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে হাট বাজারে গিয়ে ষাঁড়টি বিক্রি না করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজ খামার থেকে বিক্রি করতে চান তিনি।
তিনি আরো বলেন, এ গরুটি ক্রয় করতে অনেকেই দেখে যাচ্ছেন। কাঙ্ক্ষিত দামের কাছাকাছিও কেউ যেতে পারছেন না। সর্বশেষ গত ৪ দিনে অন্তত ১০ জন ক্রেতা যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু দামে মিলছে না কারও সঙ্গে। খামারি বলছেন, শখের এ ষাঁড়টি ন্যায্য মূল্যে পেলে বিক্রি করা হবে। ভবিষ্যতে আরো বড় আকারের একটি ডেইরি ফার্ম করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান কাউন্সিলর ও মানবিক জনপ্রতিনিধি জিয়াবুল হক।
চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.সুপন নন্দী বলেন, আলোচিত ‘বড় মিয়া’ ষাঁড়টি তাদেরই তত্ত্বাবধান ও পরামর্শে পৌর কাউন্সিলর জিয়াবুল হক লালন-পালন করে বড় করে তুলেছেন। আর তাকে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যসম্মত নির্ভেজাল প্রাকৃতিক এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো হয়েছে। এ পশুটি ভালো ও ন্যায্য মূল্যে বিক্রি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।##
পাঠকের মতামত: